পোস্টস

সমালোচনা

কুত্তায় দিছে ভাাঁড়া ভাতে ছাই

২৩ এপ্রিল ২০২৪

সাদিক ফুয়াদ

মূল লেখক সাদিক ফুয়াদ

মানে শুনতেছি,কুত্তায় নাকি অনেকের ভারা ভাতে ছাই দিতেছে। যাদের ভাতে ছাই দিছে তারা প্রমান স্বরুপ কিছু লিখিত দলিল বা পোস্টার নিজেদের মত বানায়া রাজ্যে ব্যাপন ঘটাইতেছে। 
এক বাইকার ভাই রে দেখলাম পোস্ট দিছে,যেটার ছবিতে তার বাইকের মিটারে শো করতেছে ১২০+ স্পিড এবং তার চাকার প্রায় সামনেই একটা কুত্তা । ক্যাপশনে লেখা- এমন অবস্থায় কি করা উচিৎ?  পরের লাইনে বেওয়ারিশ কুত্তা নিধনের পরামর্শ। 
পরামর্শ ভালো জিনিস। ক্ষতিকর বস্তু বা প্রানী নিধন করা খারাপ কিছু না। কিন্তু কথা হইলো- কুত্তা ছাড়া যদি অন্য কোন প্রানী,  ধরেন মানুষ যদি ক্ষতিকর হয় তারে কি নিধন করার লেইগা পোস্ট করবেন? মানে করা কি উচিৎ?  নাকি তারে রিহ্যাবে পাঠায়া নতুন জীবন দেওয়ার পরামর্শ দিবেন?  ছোট্ট কইরা একটা ঘটনা কই - গেলো রোজার আগের রোজায় ঘটা একটা ঘটনা। মুক্তাগাছা থেইকা বন্ধুর বাইকে বন্ধুরে পিছনে নিয়া ময়মনসিংহ যাইতেছিলাম। ইফতারের বেশি সময় বাকি নাই। কাঠগোলা বাজারে আমার বাইকের স্পিড ৩০-৩৫। এক চাচারে দেখলাম যাবো কি যাবোনা করতেছে রাস্তা পার হইতে যাইয়া।স্পিড আরো কমাইলাম। চাচা আমারে দেখছে দেইখা ভাবলাম, চাচায় বুঝি আমি যাবার পরেই রাস্তা পার হইবো। তার কাছাকাছি যাইতেই উনি এক দৌড়ে বাইকের সামনে সামনে আইসা হাজির। তারপরে যা হবার তা-ই হইছে। ছেছুড় খায়া রাস্তায় অল্পের জন্যে জানে বাইচা ফিরছি।চাচাও ব্যাথা ট্যাথা ভালোই পাইছে। বন্ধুর টাকা দিয়া ওইহানেই চাচারে যেমন পারি ট্রিটমেন্ট করাইলাম।আমগো দুইজনের অবস্থা বাইক চালায়া যাওয়ার মত ছিলো না।তবু সদর হসপিটাল পর্যন্ত গেছি। ইফতারের আধা ঘন্টা আগে গোল্ড লিফ খাইয়া রোজা ভাঙছি। বাজারের সবাই দেখছে যে আমাগো কোন দোষ নাই।দোষ চাচারই। তবুও তো কেই কইলোনা বুড়া যত চাচা আছে তাগোরে নিধন করতে হইবো!  বা তাগোরে বাড়ি থেইকা বের হইতে দেওয়া যাইবো না। অথচ, আপনে ১২০+ গতিতে গাড়ি চালাইবেন,একটা কুত্তা ভুল কইরা যহন আপনের গাড়ির সামনে আইসা পরবো তহন আপনে কুত্তা নিধন এর লেইগা উইটঠা পইরা লাগবেন? কুত্তা রে একবেলা খাইতে দেন?  নিয়ম কইরা আমিও দেই না খাইতে কুত্তারে।তাই তাগোরে নিধন করার প্রস্তাব ও রাখি না। 
আজকে এক নিউজে দেখলাম,শুধুমাত্র ঢাকাতেই নাকি প্রতিদিন গড়ে ২০০ মানুষরে কুত্তায় কামড় দেয়। মানে কতটা হাস্যকর একটা নিউজ!  (নিউজটা ভুলও হইতে পারে) 
কিছুদিন আগে একদল শিক্ষিত মানুষ একটা অভিযোগ তুলছে। যেটা হইলো, কুত্তার চিল্লানিতে/ ডাকাডাকি তে নাকি রাইতে ঘুমান যায় না!  ঘুম স্বর্গীয় জিনিস। এইখান থেইকা তারা বঞ্চিত হইতেছে। তাই তারা কুত্তা নিধন চায়। আমার এলাকায় কম কইরা হইলেও দেড়শো কুত্তা আছে।তাগো চিল্লানিতে আজ অব্দি আমার ঘুমের সমস্যা হয় নাই। আপনের কি মনে হয় যে আমি কানে তুলা দিয়া ঘুমাই? আমার বাসাও সাউন্ডপ্রুভ না!  তাইলে আপনের বাসায় এতো শব্দ ক্যান যায় বুঝেন এইডা? গজব!  এইডা সামান্য গজব।আপ্নারা যা শুরু করছে,সামনে আরো বড় গজব অপেক্ষা করতেছে। প্রস্তুত থাইকেন। 
আমি এসব নিয়া কিছু কইতে চাই নাই।আমার কথা অতদূর পৌছাবে না জানি। তবু আপনাগো এইরকম ছেলেমানুষী দেইখা নিজের টাইমলাইন টাতে জ্যাম ধরাইতেছি। কোন প্রানী নিধন/মাইরা ফেলার অধীকার কোন রাষ্ট্রের বা জনগনের নাই। দলিল ঘাইটা দেখেন,কোথায় লেখা নাই,কুত্তা মাইরা ফেলার কথা। জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পালন করতে হইবো। শিক্ষিত মানুষ এইটা বুঝেন না? নাকি তালে তাল মিলায়া অসহায় প্রানীগো মারার পায়তারা করতেছেন? পারলে সিজনালি বন্ধ্যাত্বকরণ পদ্ধতি চালু করেন।মাইরা ফেলা কোন সমাধান না। কুত্তা উপকারী প্রানী। চোখ,কান,নাক,গলা,চ্যাট,প্যাট,শিরা,উপশিরা, ধমনি ইত্যাদি দিয়া বিবেচনা কইরা দেখেন।দেখবেন অপকারের থেইকা উপকার বেশী করতেছে এই কুত্তা। 
আল্লাহ আমগো বুঝার তৌফিক দান করুক।