পোস্টস

নিউজ

মারা গেলেন 'বাবর দ্য এলিফ্যান্ট' এর লেখক লরেন্ট ডি ব্রুনহফ

২৬ মার্চ ২০২৪

নিউজ ফ্যাক্টরি

Featured Image
‘বাবর দ্য এলিফ্যান্ট’ এর মাধ্যমে কয়েক দশক ধরে তরুণ পাঠকদের আনন্দ দিয়ে আসছিলেন ফরাসি লেখক এবং ইলাস্ট্রেটর লরেন্ট ডি ব্রুনহফ। তিনি ২২ মার্চ ৯৮ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের কী ওয়েস্টে নিজ বাড়িতে মারা যান। তার স্ত্রী, সমালোচক এবং লেখক ফিলিস রোজ, ই-মেইলের মাধ্যমে সিএনএনকে এই তথ্য জানিয়েছেন। ডি ব্রুনহফ ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন।  

‘হিস্টোয়ার ডি বাবর’ বইতে বাবর চরিত্রটি প্রথম সৃষ্টি করেছিলেন তার বাবা ফরাসি লেখক জাঁ ডি ব্রুনহফ। বইটি ১৯৩১ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৩৭ সালে তার মৃত্যুর পর ছেলে লরেন্ট ডি ব্রুনহফ বাবর সিরিজ অব্যাহত রাখেন। তিনি বাবরকে নিয়ে ৪০টিরও বেশি বই লিখেছেন।      

ডি ব্রুনহফ ২০০৩ সালে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে সিএনএনকে বলেছিলেন, ‘রাতের বেলা আমার মা কাল্পনিক একটি হাতির গল্প বলে আমাদের ঘুম পাড়াতেন। আমি এবং আমার ছোট ভাই গল্পটি খুব পছন্দ করতাম। আমার বাবা ইলাস্ট্রেটর ছিলেন। আমরা বাবার স্টুডিওতে গিয়ে তাকে এই গল্পটি সম্পর্কে বললাম। তিনি আমাদের জন্য একটি বই তৈরি করতে শুরু করেন। এভাবেই হিস্টোয়ার ডি বাবরের গল্পগুলো লেখা শুরু হয় এবং জন্ম নেয় বাবর নামে জনপ্রিয় একটি চরিত্রের।'  

বাবর সিরিজের জন্য জাঁ ডি ব্রুনহফ মাত্র ৫টি বই লিখেছিলেন। ১৯৩৭ সালে যখন তিনি মারা যান, তখন লরেন্ট ডি ব্রুনহফ ১২ বছরের কিশোর ছিলেন। পরবর্তীতে লরেন্ট এই সিরিজের বইগুলো লিখতে শুরু করেন।    
বাবর নামে তরুণ এক হাতির কাহিনী নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে। স্বর্গের মত সুন্দর একটি বনে বাস করতো সে। একদিন হঠাৎ শ্বেতাঙ্গ এক শিকারীর গুলিতে মারা যায় তার মা। বাবর পালিয়ে এমন একটি শহরে যায় যেটি দেখতে অনেকটা প্যারিসের মত।  

মানুষের সমাজে এসে বাবরও মানুষের মতই পোশাক পড়তে শুরু করে। অবশেষে সে জঙ্গলে ফিরে যায়। বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে হাতিদের রাজা মারা যাওয়ার পর সেখানকার রাজা নির্বাচিত হয় বাবর। তার রাজত্বে সব হাতি মানুষের মত কাপড় পরতে শুরু করে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের ফরাসি সমাজের সদস্যদের মত তারা আচরণ করে।      

বইটি প্রকাশের পর বাবরের চরিত্রটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৩৩ সালে বইটির ইংরেজি ভার্সন দ্য স্টোরি অব বাবর প্রকাশিত হয়। বাবরের অ্যাডভেঞ্চারগুলো ১৯টি ভাষায় ৩০ হাজারের বেশি প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে। এছাড়া এই কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে টিভি সিরিজ, চলচ্চিত্র।     

সাবেক মার্কিন ফার্স্টলেডি লরা বুশের ন্যাশনাল রিডিং ইনিশিয়েটিভ লিস্টে বাবর সিরিজের বইগুলো পড়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। 

তবে বাবর দ্য এলিফ্যান্ট নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। শিক্ষাবিদ হারবার্ট আর কোলের মতে বাবরের কাহিনীগুলো আনন্দদায়ক হলেও এগুলো উপনিবেশবাদের ন্যায্যতা দেয়। 

বিশ্বজুড়ে বাবরের অনেক ভক্ত রয়েছে। মিকি মাউসের মতই বাবরও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি কার্টুন চরিত্র। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিশুদের আনন্দ দিয়ে আসছে এই চরিত্রটি।

সূত্র: সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান, কিরকাস