পোস্টস

গল্প

গাছ লাগানো কি অপরাধ হয়ে গেল কবির আলীর?

২৫ এপ্রিল ২০২৪

তানবীর রহমান

মূল লেখক তানবীর রহমান

চলছে গ্রীষ্মকাল। তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে হিট এলার্ট জারি করা হচ্ছে। কিন্তু এত গরম থেকে বাঁচার উপর কী? সরব উঠলো গাছের পরিমাণ কমে গেছে গাছ লাগাতে হবে। 

গাছ লাগান,পরিবেশ বাঁচান— এই স্লোগানের সাথে মোটামুটি সবাই পরিচিত। এই তীব্র গরমেও গাছ লাগানোর ঘোষণা দিলেন কিছু সেলিব্রিটি। অথচ এখন গাছ লাগানোর মৌসুম নয়।

কবীর আলী একজন বাংলাদেশি। একদিন ফেসবুকে দেখতে পেলেন গরমের মধ্যেও গাছ লাগানোর আহ্বান। তার ভেতরে সচেতনতা জেগে উঠলো। যেই ভাবা সেই কাজ। তিনি একই জাতের বেশ কিছু চারা গাছ রোপন করলেন। নিয়মিত যত্নও করতে লাগলেন। এরপর কেটে গেল বেশ কয়েকমাস।

হঠাৎ একদিন এলাকায় পুলিশের গাড়ি আসল। খুঁজতে লাগল কবির আলীকে। তিনি লাপাত্তা। কিন্তু তার লাগানো সেই গাছগুলোর সবুজ খাঁজকাটা পাতা বাতাসে দোল খাচ্ছে। দেখে পরান জুড়িয়ে যায়। নিষ্ঠুর পুলিশেরা গাছগুলো উপড়ে ফেলল। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিল। এলাকার মানুষজন হতবাক চোখে সে দৃশ্য দেখলো। পুরো পাড়ায় হৈচৈ শুরু হয়ে গেল।

দুইদিন চিরুনি অভিযানে খোঁজ চলল কবির আলীর, অবশেষে ধরা গেল তাকে। ওদিকে এই ঘটনা প্রচার হয়ে গেছে সংবাদপত্রে। সংবাদ পৌঁছে গেল দেশের আনাচে-কানাচে। মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে ঠাট্টায় মেতে উঠছে। 

সাংবাদিকরা হাতকড়া লাগানো কবির আলীর কাছে জিজ্ঞেস করলেন,"আপনি সচেতনতা থেকে গাছ লাগালেন অথচ গাছের জন্য পুলিশ গ্রেফতার করল, কেন? কি গাছ লাগিয়েছিলেন?"

তিনি উত্তর দিলেন, "কি গাছ লাগাইছিলাম আমজনতা তো জানে, আমারে জিগান ক্যান!"

লেখক সম্পর্কে

আমি তানবীর রহমান। পড়াশোনা করছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফি ডিপার্টমেন্টে। 

ফিলোসফির চর্চা করি। সেই সাথে সাহিত্য, ধর্মতত্ত্ব, রাজনীতি ও সমাজতত্ত্ব নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। চেষ্টা করি সমাজের সংস্কারের জন্য নিজের জায়গা থেকে কথা বলতে এবং মানুষের মাঝে নিজের ভাবনা জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে। বিশ্বাস করি নিজের জায়গা থেকে সচেতনতা ও কাজে তার বাস্তবায়ন সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 

কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ লিখি। কখনো ক্রীড়াজগত নিয়েও লেখা হয়। আমি স্বাধীনতাচেতা, যখন যা ভালো লাগে তা মনোযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি।

স্বপ্ন দেখি একদিন দেশটা 'সোনার বাংলাদেশ' হিসেবেই গড়ে উঠবে। মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। বাংলাদেশ প্রকৃত শিক্ষিত মানুষদের দেশ হয়ে উঠবে। সবাই তাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতভাবে পাবে। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য থেকে মুক্তি হবে। প্রভাবশালী লোকেদের দাসত্ব থেকে মুক্তি মিলবে খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষের।

আমার স্বপ্ন হয়তো-বা পূরণ হবে, হয়তো হবে না। কিন্তু স্বপ্নই আমাদের আশা হয়ে বাঁচতে অনুপ্রেরণা জোগায়।  সত্যের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
তানবীর রহমান তানবীর রহমান শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়