পোস্টস

নন ফিকশন

ছাড়পোকা

২২ এপ্রিল ২০২৪

আবদুল্লাহ আল মুনীর

মূল লেখক আবদুল্লাহ আল মুনীর

পৃথিবীতে পোকাজাতির যত প্রকার রয়েছে, তার মধ্যে সবচে ভয়ানক জাতি হচ্ছে ছাড়পোকা৷ ওরা অসভ্য, ওরা ইতর, ওরা নৃশংস৷ ওরা মুখচোরা মীরজাফর। দিনের আলোয় ওদের সাক্ষাৎ মেলে না, ওরা নিশাচর প্রাণী৷ রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত মানুষের হাতে, পিঠে, কাঁধে, মুখে— এমনকি নিষিদ্ধ সীমান্তেও ওরা ধারালো দন্ত নিয়ে বিচরণ করে। কোনো সুখের স্বপ্ন দেখা ঘুমন্ত মানুষ যখন টের পায়, অজান্তে কেউ তার রক্ত চুষে খাচ্ছে, তখন এই ইতরশ্রেণীর পোকা দৌড়ে পালায়। 

ওরা দ্রুতগামী ছ্যাচড়া প্রাণী। ওদের গা মিশমিশে কালো, নরম দেহ, ধরলে বোঝা যায় না। দুই আঙুলে টিপে ধরলেও অনায়াসে হতচ্ছাড়াগুলো ঠিক পার পেয়ে যায়। ওদের গায়ে পৃথিবীর সবচে প্রকটতম দুর্গন্ধ। টিপ দিয়ে হত্যা করলে মৃত ছাড়পোকার গন্ধে হত্যাকারী খোদ আধমরা হয়ে যায়। 

ওদের মধ্যে যারা উচ্চবিত্ত, তারা বসবাস করে বইয়ের ভাঁজে, খাটের জোড়ায়, দেয়ালের চিপায়। আর যারা মধ্যবিত্ত, তারা বালিশের কোণায়, তোষকের সেলাইয়ে। স্ত্রী ছাড়পোকাদের জন্মনিয়ন্ত্রণের অভ্যাস নেই৷ ওরা একরাতে শত শত শিশু ছাড়পোকার জন্ম দেয়। বেয়াদব শিশুগুলোকে মনুষ্যচোখ দেখার শক্তি রাখে না, কেবল কামড়ের দাগ দেখে ওদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। 

পৃথিবীর সকল ছাড়পোকার নিকট সবিনয় প্রার্থনা, আপনারা মানুষজাতির সঙ্গে ঐক্য গড়ে তুলুন৷ এ দুর্বল জাতি আপনাদের সাথে যুদ্ধে জয়ী হবার শক্তি রাখে না। গ্যাস ট্যাবলেট, চায়না ট্যাবলেট কিংবা কেরোসিনের স্প্রে দিয়ে  আপনাদের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি এ জাতি করতে পারেনি৷ তবুও সকল মানুষ— বিশেষত হোস্টেল বোর্ডিংয়ে থাকা ব্যাচেলররা আপনাদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করছে। অনুরোধপূর্বক আমাদের রক্তের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন৷