পোস্টস

গল্প

প্যাশেন্ট ফোরটি থ্রি

১৬ এপ্রিল ২০২৪

S. M. Riad Chowdhury

মূল লেখক Riad Chowdhury

গাছের ডালে লম্বাসময় বসে থাকলেও রাসুর বিরক্তি ধরেনা। বরং অপেক্ষায় তার মধ্যে এক অতীন্দ্রিয় আনন্দের সঞ্চার হয়। আর বোধ করে রোমাঞ্চ। রাত যত গভীর হয়, রাসু ততই রোমাঞ্চ বোধ করে। তার শিকার চুপচাপ শুয়ে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই যে সেটা ভোগ করতে চলেছে সেটা মাথায় বাজের মতো ঝলক দিয়ে উঠলে সে তার ভেতরের পশুটা জ্বলে ওঠে। পশুটা গর্জন চেপে রাখে। পাছে কবরের বাকি জীবগুলো গর্জন শুনে আবার ভয় পেয়ে না যায়।

রাসু অপেক্ষা করে। নিজের হৃদস্পন্দনটা ঘড়ির মিনিটের কাটার মতো টিকটিক আওয়াজের মতো মনে হয়। হৃদয়ঘড়ি চলতে থাকে। আর সামান্য। খেলু দারোগা একটু পরেই নিজের টিনের জীর্ণ ঘরটাতে ঢুকে যাবে। কবরস্থানে গোরখোদকের কাজ নিলেও রাতে খেলু ভয়ে ঘোরাঘুরি করেনা বেশি। রাসু জানে, খেলু নাকি আত্নার চলাফেরা আর কান্নার আওয়াজ শুনে। তবুও গোরখোদকের পাশাপাশি কবরস্থানের দেখাভালও করে। তাই রাতের বারোটার কাছাকাছি কাঁপতে কাঁপতে পা ফেলে পুরো কবরস্থানটা একবার ঘুরে দেখে। আর তাতেই তার লুঙ্গি ভিজে যায়। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই খেলুকে দেখতে পেলো রাসু। কবরের কেয়ারটেকার বা গোরখোদক যাই হোক না কেন, হাঁটাচলা তার একদম পুলিশের মতো। এই হাড়কাঁপানো শীতেও সেটা বজায় রেখেছে খেলু। এই জন্যই আশেপাশের মানুষ তাকে খেলু দারোগা বলে ডাকে।

যাহোক, খেলু নিজের জীর্ণ ঘরটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাসু খুশি হয়। তার হাতটা লুঙ্গির ওপর দিয়ে অঙ্গটায় হাত বোলায়। নোংরা দাঁত কেলানো হাসিটা তার ভেতরে জেগে ওঠা সাপটার জানান দেয়।

কিন্তু একটা ভয় আবার তার মনের দরজার টোকা দেয়। এই মুহূর্তে যেটা একদমই অনাকাঙ্ক্ষিত। সে ভুলে যেতে চায় জিনিসটা। 'না না, এবার হইবোই,' বারবার কথাটা মনে মনে আওড়ে নিজেকে সাহস দেয় সে। অঙ্গটা আরেকবার চেপে ধরে।

রাত বেড়েছে। খেলু দারোগাও আর বাইরে নেই। পুরাই সুনশান এখন জায়গাটা। কবরস্থানের এখানে ওখানে হলুদ বাতি জ্বালানো থাকলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল আলো দিচ্ছে। কিন্তু এই অন্ধকারই তার কাজটা সহজ করে দিবে। কবরস্থান রাসুর হতের তালুর মতোই চেনা। গাছ থেকে নেমে আসতে কোনো অসুবিধাই হলো না।

এতোক্ষণ ধরে সাথে থাকা কোদালটার প্রতি তেমন মনোযোগ দেয়নি রাসু। আদিম প্রবৃত্তির তাড়না জেকে বসেছে মাথায়। অন্যকিছু মনে রাখার সময় নেই। তবুও হাঁটতে হাঁটতে কোদালটা নেড়েচেড়ে দেখলো। ঠিকই আছে। মাটি সরানোর জন্য যথেষ্ট। ঘোরলাগা পদক্ষেপে সে এগিয়ে যায় শিকারের দিকে।

কবরটার কাছে এসে দেখলো এদিকটা ভালোই অন্ধকার। তাই না দেখেই কোদাল চালাতে হবে। তবুও পরোয়া করে না রাসু। কতটুকু আর কীভাবে খুঁড়তে হবে অবচেতনে সে সব জানে। প্রত্যেকবার ভোগের আগে যেমন তার মুখে লালা চলে আসে, এবারও তাই হলো। 'হি হি,' ছোট হাসিটা দিয়ে ঠোঁট চাটলো রাসু।

কবর আজকেই দেয়া হয়েছিলো। খেজুরের পাতা সরিয়ে রাসু খুঁড়তে শুরু করে। কোদালের দাঁত প্রতিবার মাটিতে আঁচড় কাটার সাথে তার উত্তেজনা বাড়ে। মুখে ঘরঘর শব্দ নিয়ে রাসু তার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।

খুব তাড়াতাড়িই কবর খোঁড়া শেষ হয়। চাটিটা সরিয়ে কাফনের কাপড় খোলায় মনোযোগ দিলো রাসু। শরীরটাতে হাত দিতেই ভেতরের পশুটা আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠলো। মারা গেলে শরীর শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু উপযোগ শেষ হওয়ার আগে রাসুর কাছে সব নারীদেহই জীবিত। গিঁটটা খুলে পা জোড়ার দিকে তাকায় সে। ধবধবে সাদা দেহ দেখে তার মুখে লালা ঝাড়ে।

কাফনের কাপড় পুরোপুরি খুলে ফেললো রাসু। হাতের টর্চটা জ্বালিয়ে তাক করলো শিকারের দিকে। নগ্ন শরীরের আকর্ষণে সে সোজা দাঁড়াতে পারছে না। ইচ্ছে করছে এখনি ঝাঁপিয়ে পড়তে। তবুও চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে সে লাশটাকে। পোস্টমর্টেমের পর শরীরটার সৌন্দর্য একটু বিকৃত হলেও রাসুর ভ্রুক্ষেপ নেই। সে মাথাটা উপর-নীচ করে উপভোগ করতে লাগলো। উরুর মাঝে আবার হাত গেলো তার।

এবার হাঁটুগেড়ে বসলো সে। চারপেয়ে প্রাণীর মতো শরীরটার উপর উবু হয়ে কাছ থেকে দেখতে লাগলো। যেন শরীরের প্রতিটা লোমকূপ গুণে দেখছে সে। মেয়েটা বেঁচে থাকলে হয়তো রাসুর কামার্ত মুখটা দেখে ভয়েই মরে যেত। তার নধর শরীরটায় পশুর আঁচড় বসতে চলেছে। সেটা কি মানতে পারতো মেয়েটা?

রাসুর মুখ নামিয়ে মেয়েটার শরীরের ঘ্রাণ নেয়। মেয়েটার মায়াবি চোখ তাকে আকর্ষণ করেনা। কমলার কোয়ার মতো ঠোঁট রাসুর বুকের ধকধকানি বাড়িয়ে দেয়। নিজের ঠোঁট ছোয়ায় রাসু। তারপর দাঁতের আঁচড়ে দাগ বসিয়ে দেয় সেগুলোতে।

রাসুর ঠোঁট আর জিভ মেয়েটার থুতনি বেয়ে নিচে নামতে থাকে। গলা থেকে বুকের দিকে যেতেই সে আবার সচেতন হয়ে ওঠে। টর্চটা ভালোভাবে ধরে মেয়ে বুকের ওপর। ভরাট স্তনের বোঁটাগুলো যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে টর্চটা তার দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে নরম মাংসপিন্ডগুলো মুঠোর পুরে নেয়। আনন্দে তার মাথা ভনভন করে ওঠে। যেনো কোনো ছোটোশিশু তার বহু আকাঙ্খিত খেলনা হাতে পেয়েছে। আর ধরে রাখতে পারেনা নিজেকে। নিচু হয়ে যায় সে। মুখ নিয়ে সমানে কামড় বসায়। ছিঁড়ে ফেলে স্তনের বোঁটাগুলো। এই হিংস্রতা দেখে আশেপাশের প্রকৃতিও যেন শিউরে উঠে।

মেয়েটার শরীরের উপর থেকে ক্ষত বিক্ষত করতে করতে নিচে নামতে থাকে রাসুর মুখ। নরম তলপেটে আঁচড়াতে আঁচড়াতে সে দুই উরুর মাঝখানে এসে থামে। টর্চটা পাশেই ছিলো। হাতড়ে নেয় সেটা। খ্যাকখ্যাক হাসতে শুরু করে সে। আচানক শরীরটার উরু কামড়ানো শুরু করে। সন্ধিচ্ছেদে গিয়ে তার চোখ আটকে যায়। মুখ থেকে গড়িয়ে পড়া লালা দিয়ে হাত ভিজিয়ে নেয়। তারপর জায়গাটায় ভিজিয়ে নেয়। মনে মনে মেয়েটার শিৎকার শুনতে পায় সে। জিভ বের করে বিশ্রি হাসি দিয়ে সেটাই কাজে লাগালো তারপর। তার আসল খেলা শুরু হবে এখন।

রাসু উঠে দাঁড়ায়। কামের লাভা মস্তিষ্কের পুরোটাই গ্রাস করে ফেলেছে। লুঙ্গিটা ছেড়ে গায়ের ময়লা জামাটা খুলে ফেললো। কুতকুতে কালো দেহটায় এখন জানোয়ারের শক্তি। শিকারের ওপর ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত।

উন্মুক্ত লিঙ্গটায় হাত দিয়ে আবার হাঁটু গেড়ে বসলো সে। মেয়েটার শরীরটা ক্ষত-বিক্ষত হলেও এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। মেয়ের থলথলে উরুতে চাপড় দিয়ে হাসলো সে। আরো সামনে এগিয়ে গেলো একটু আরাম করে কাজটা করার জন্য। ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে। একটা নারীকন্ঠের হাসি। একবার খিলখিল করে হাসছে, তো একবার অট্টহাসি দিচ্ছে। পুরো কবরস্থানে সেই হাসি ছড়িয়ে পড়ছে। এরপর আরেকটা নারীকন্ঠ শুনতে পায় রাসু। প্রথম কন্ঠটার সাথে এই নতুন কন্ঠটাও তাল মিলিয়ে হাসতে থাকে। রাসুর মনে কামের ঘনত্ব কমতে থাকে। জায়গা করে নিতে থাকে ভয়।

কন্ঠের সংখ্যা বাড়তে থাকলে রাসুর মাথা ভারী হয়ে যায়। সে কানে হাত দেয় আর সহ্য করতে না পেরে। ‘না, না। হইতে দিমু না। না না,’ সে গলা ছেড়ে চিৎকার করে। লিঙ্গতে হাত দেয় সে। বুকটা ধরাক করে ওঠে তার। জিনিসটা নিথর হয়ে ঝুলে আছে। কিন্তু একটু আগেও তো ঢাউস জিনিসটা তো লোহার মতো শক্ত ছিলো। চোখ বন্ধ করে ফেললো সে। শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়। ঘর্ষণের মাধ্যমে জিনিসটাকে আবার জাগিয়ে তুলতে চায়। কিন্তু কিছুতেই কাজ হয় না। হাসির আওয়াজটা আগের থেকে বেশি লাগছে কানে। চোখ খুললো আবার। এবং বুঝতে পারলো কারণটা।

খোঁড়া কবরটার চারপাশে অনেকগুলো উলঙ্গ নারী দাঁড়িয়ে আছে। কোনোটা সাদা, আবার কোনোটা কালো। দেহগুলোর নানা জায়গায় ক্ষত, আর আঁচড়ের দাগ। চেহারাগুলো খুব পরিচিত মনে হলো রাসুর। তাদের বাতাস কাঁপানো হাসি তার কলিজায় তীরের মতো এসে বিঁধছে।

দুদিকে উদ্ভ্রান্তের মতো মাথা দোলাতে লাগলো রাসু। ঘামে সারা শরীর চুপচুপ করছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, বুকের ওপর যেন বড় শিলাপাথর চাপা দিয়েছে কেউ। পেছনে হেলে পড়লো সে। কান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হলেও তার সামনের অবয়বটা খেয়াল করলো। সেও হাসতে শুরু করেছে। চোখ বন্ধ করে দৃষ্টি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো। খুলতেই মেয়েটার মুখ দেখতে পেলো তার মুখের সন্নিকটে। ছেঁড়া ঠোট, কালশিটে মুখ নিয়ে সে রাসুর দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ রাসু তার লিঙ্গতে শক্ত হাতের স্পর্শ টের পেলো। বরফের মতো ঠান্ডা হাতটা মুঠি করে ধরেছে জিনিসটা।

একটা শব্দ হয়ে লিঙ্গটা ছিঁড়ে ফেললো জায়গা থেকে। মেয়েটা হাসতে শুরু করেছে। তার হাতে মাংসপিন্ডটা দেখে রাসুর গগণবিদারী চিৎকার করতে চায়। কিন্তু তার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হয়না। হাসিটা ঝংকার আরো বেড়ে যায়।

—--------------------------------------------------------------------------
বেডের লোকটার কপালের পাশে রগগুলো পাইপের মতো ফুলে ওঠেছে। চোখগুলো এতো বড় বড় হয়ে আছে যেন এখনি বিস্ফোরিত হবে। সাদা অংশের ভেসেলগুলো রক্তের মতো লাল হয়ে আছে। দুঃস্বপ্নটার ভয়াবহতাটা চারপাশের মানুষগুলো আঁচ করতে পারলো। লোকটা যদি চলাফেরা করতে পারতো তাহলে এতক্ষণে উন্মাদের মতো ছোটাছোটি করতো।

‘নাম: আবদুর রাসুল,’ দেশের খ্যাতনামা সাইকোলজিস্ট প্রফেসর জ্যাক শুরু করলেন, ‘ওরফে রাসু। বাড়ি নোয়াখালীর একলাসপুর। যদিও নাড়ির টান বলে যা ছিলো তা অনেক ছিন্ন হয়েছে তার। তার পরিবারও সম্পর্ক রাখেনি তার সাথে অনেকদিন হলো।’

‘সেক্স আ্যডিকশনের চূড়ান্ত পরিণতি বোঝার জন্য প্যাশেন্ট ফোরটি থ্রি মানে রাসুর চেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই মুহূর্তে বাংলাদেশে খুব কমই আছে। এই বিকৃতি তার থেকে শুধু সুস্থ মনটাই কেড়ে নেয়নি। তার দেহটাও কেড়ে নিয়েছে।’

‘জি। পুরোপুরি অবশ হয়ে গিয়েছে তার শরীরটা,’ কাচাপাঁকা দাড়িওয়ালা এক ইন্টার্ন বললে প্রফেসর জ্যাক মাথা নেড়ে সায় দিলেন।

‘প্যাশেন্ট ফোরটি থ্রির এই পরিণতি বুঝতে হলে আমাদের তার অতীতে যেতে হবে। আমি আমার সাধ্যের মধ্যে রিসার্চ করে যা জেনেছি তা আপনাদের থাকে শেয়ার করতে চাই। এবং কেস স্টাডিটার কপি ইতোমধ্যে আপনাদের হাতে হাতে চলে গেছে নিশ্চয়,’ প্রফেসরের ইঙ্গিতে সবাই মাথা নাড়িয়ে জানালো যে তারা কপিটা পেয়েছে। কিন্তু আ্যবস্ট্রাক্টটাও ঠিকমতো পড়ার সময় পায়নি তারা। প্রফেসর সেটা জানতেন। ‘তবে আপনাদের জন্য প্যাশেন্টের লাইফের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আমি এখন দেবো।’

‘এক নিম্নবিত্ত ধার্মিক পরিবারে রাসুর জন্ম হয়। ঐ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত এমনই হয়। সহজ-সরল জীবনযাপন, ধর্মকর্মের মাধ্যমে পরজন্মের প্রস্তুতি। কিন্তু রাসুর আগেও তার বাবা-মা সাতটার মতো সন্তান নিয়েছেন। ফলাফল, রাসুর ভালো দেখভাল তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। অভাবের কারণে রাসুর উপযুক্ত ভরণপোষণ হয়নি। খুব ছোটোবেলাই রাসু সেটা বুঝতে পারে। সবসময় একটা পালানোর তারণা অনুভব করতো। সেখান থেকেই অনেক ছোটবয়সে নেশার সাথে জড়িয়ে পড়ে সে।’

‘কিন্তু বিড়ি, গাজা বা মদের নেশাও তাকে বেশি টানলো না। কিসের একটা অভাববোধ করতো সে তখনো। সেখান থেকেই সে যৌনতার দিকে ঝুঁকে পড়ে।’

‘দশ-বারো বছর পার করার পর সে খেয়াল করলো তার গলার স্বর পাল্টে গেছে। মুখে দাঁড়ি গজাচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তনটা তার চোখে পড়লো সেটা ঘটলো তার কোমড়ের নিচে।’

ছেলে ইন্টার্নগুলো মুখ টিপে হাসলো কথাটা শুনে। মেয়েগুলো বিব্রতবোধ করলেও কৃত্রিম হাসি দিয়ে সেটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করলো। প্রফেসরের মনে হলো এতটুকু তো বলা যেতেই পারে। আফটার অল, যৌনাসক্তির লেসন দিচ্ছেন তিনি।

‘স্বপ্নদোষ আর হস্তমৈথুন এগুলোর সাথে পরিচয় হলো রাসুর। আর ততদিনে একটা স্মার্টফোন সে জোগাড় করে ফেলেছিলো তার সমবয়সী বন্ধুদের প্ররোচনায়। বুঝতেই পারছো নতুন টেস্টোস্টেরন-চার্জড ছেলেগুলো কি করবে এই সময়টায়।’

‘পর্ণোগ্রাফি আর বন্ধুদের অসৎ সঙ্গে থেকে রাসু আরেকটা জিনিস আবিষ্কার করলো। তার লিঙ্গটা তার সমবয়সী বন্ধুদের থেকে একটু বড়। সে নিজেকে পর্ণ ভিডিওর সেই পুরুষদের মতো ভাবতে লাগলো। যদিও আমরা ভালো করেই জানি এই অভিনেতাদের শরীর, বিশেষ করে যৌনাঙ্গ, আর আচরণ সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা হয় কেন। রাইট?’

‘জি স্যার,’ এবার মেয়ে ইন্টার্নগুলোর একজনই উত্তর দিলো, ‘বিভিন্ন যৌনোদ্দীপক ঔষধ, বডিপার্ট ট্রান্সপ্ল্যানট, কঠোর পরিচর্যা, স্ক্রিপ্টেড ঘটনা, অতিমাত্রায় ফ্যান্টাসি ছাড়াও আরো অনেক কিছুই ফেইক হয় এই ভিডিওগুলোতে।’

‘হুম। কিন্তু রাসুর অস্থিমজ্জায় ঢুকে গেছিলো জিনিসটা। এতোদিনে সে এমন নেশা খুঁজে পেয়েছে যেটা কিনা তাকে ডুবিয়ে রাখতে পারবে।’

‘কিন্তু মোবাইলের স্ক্রিনে আর কতদিন নিজেকে আবদ্ধ রাখা যায়? ভিডিওগুলো তার মনে যে কামনা জাগিয়ে তুলেছে সেটা চরিতার্থ করার সুযোগ খুঁজতে থাকে সে। মানে অবৈধ যৌনসঙ্গমের পথ খোঁজা শুরু করে। আগে শুনেছো গ্রামটা অনেক ধার্মিক। গুজব আছে রাসু নাকি সুযোগ না পেয়ে তার বন্ধুদের সাথেই…,’ কথাটা শেষ করা লাগলো না প্রফেসরের। ইন্টার্নদের মুখে বিব্রতবোধ স্পষ্ট ফুটে ওঠেছে। প্রফেসর বিদেশে সমকামিতার যে অবস্থা দেখেছেন সেদিক থেকে তার দেশ এখনো জিনিসটাকে মেনে নিতে পারেনি। তিনি নিজেও কেমন কুন্ঠাবোধ করেন।

‘যাহোক, খুঁজলে নাকি ভগবানকেও পাওয়া যায়। রাসুও পেয়ে গেলো তার সুযোগ। কোনো এক কমবয়সী বিধবার নজড়ে পড়লো সে। সেই বিধবার সাথে তার সম্পর্কটা শুধু যৌনতায় সীমাবদ্ধ ছিলোনা। তোমাদের একটু আগেই বলেছি, রাসু ছোটোবেলা থেকে কিছু একটার অভাববোধ করতো। সেটা আর কিছুই না, কানেক্টেডনেস। বেশি সন্তান-সন্ততি থাকায় তার মা-বাবা তাকে প্রয়োজনমতো মায়া-মমতা, ভালোবাসা দিতে পারেনি। সেটা সে পেলো সেই বিধবার কাছ থেকে। রাসু হয়তো এই নেশা থেকে দূরে সরে এসে একটা সুস্থ জীবন পেতে পারতো।’

‘কিন্তু সেটা হতে দিলোনা সমাজ,’ প্রফেসরের কথায় আফসোস ঝড়ে পড়ে। ‘গ্রামে জানাজানি হয়ে গেলো তাদের কথা। রাসু সবেমাত্র এডাল্টহুডে পা দিয়েছে। মেয়েটা তার থেকে বয়সে অনেক বড়। আর সে বিধবা। রাসুর পরিবার সমাজের কাছে ছোটো হতে পারবে না তারা। মেয়েটাকে সব দোষের মূল ঘোষণা করে গ্রামছাড়া করা হলো। আর রাসুর বাবা-মা তাকে শহরে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে লেবারের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনাটা তার হৃদয়ে বড় আঘাত দিয়েছিলো। তবে কয়েকমাস পরে যখন জানতে পারে, তার ভালোবাসা বিতাড়িত হওয়ার পর আত্নহত্যা করেছে তখন শুরু হয় তার অধঃপতনের দ্বিতীয় অধ্যায়।’

‘ দুঃখ ভুলতে তার কাম লালসা এবার আরো ভালোভাবেই জেগে উঠলো। ভেতরের একটা দানব গড়ে তুলছিলো সে। দানবটা শুধু মেয়েদের ছিঁড়েখুঁড়ে খাবার বস্তু জ্ঞান করা শুরু করলো। আগের থেকে আরো হার্ডকোর পর্ণোগ্রাফির দিকে ঝুঁকলো সে। সেগুলোই তার কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হতো। আর এই শহরে তো গ্যানোপ্লেক্স, জিনসেং নামের ফাল্তু ওষুধগুলো রাস্তা দিয়ে হাটলেই পাওয়া যায়। তাও কোনোরকম প্রেসক্রিপশন ছাড়াই। এগুলো সে গ্রহণ করতে থাকলো অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায়। তার এই আক্রমণাত্নক যৌনাচরণের কারণে অনেক যৌনকর্মীই আহত হতো। কিছুদিনের জন্য এক পল্লীতে থেক তাড়িয়ে দেওয়া হলে আরেক পল্লীতে যেতো। তারপর আবার সব স্বাভাবিক।’

‘গ্রামে রাসুর বাবা-মার কাছে আবার খবর গেলো। ছেলেকে এভাবে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেখে তারা ঠিক করলেন তাকে মিডল-ইস্টে পাঠিয়ে দেবেন। টাকা-পয়সা জোগাড় করে অবৈধ পথে তাকে দুবাই পাঠানো হলো। কিন্তু তারা ঘুণাক্ষরেও ধরতে পারেনি আরো অন্ধকারে তলিয়ে যাবে তাদের রাসু।’

‘দুবাই সম্পর্কে তোমরা কতটুকু জানো জানিনা। কিন্তু আমার কাছ থেকে জায়গাটা দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। বার দুবাই বা মিনাবাজারের মতো জায়গাগুলোতে প্রস্টিটিউশন বিষয়টা কমন হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এটা যেমন একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আবদ্ধ থাকে, সেখানে উল্টো। মাসাজ সার্ভিসের মাধ্যমে ছুতায় সেটা অন্য লেভেলে চলে গেছে।’

‘রাসুর জন্য এটা একটা নতুন দরজা খুলে দিলো। তবে ইলিগাল সেক্স সেখানে অনেক খরচার ব্যাপার। রাসুর মতো একজন লেবারের পক্ষে সেটা জোগাড় করা সম্ভব ছিলোনা। রাসু পথ খুঁজতে খুঁজতে শেষ পর্যন্ত একটা কাজই বেছে নিলো। প্রস্টিটিউশন।’

কথাটা শুনে অনেকের ভ্রু উপরে উঠে গেলো। ‘হ্যাঁ, রাসু মেইল প্রস্টিটিউট হিসেবে কাজ করতে লাগলো। আর যে টাকা উপার্জন করতো কাজটা করে সেটা দিয়ে সে নিজের যৌনচাহিদা মেটাতো।’

‘বিডিএসএম এক্টিভিটিজ সেক্সের একটা বিকৃত ফর্ম বলে সাবকন্টিনেন্টের মানুষদের কাছে মনে হয়। কিন্তু দুবাইতে সেটারও সুযোগ পেলো রাসু। ব্যাথা দিয়ে যৌনসুখ অনুভূত হয় সেটা তার বিকৃত মস্তিষ্ক ভালোভাবে গ্রহণ করে। আর লম্বা সময় ধরে এসব করার জন্য সিলডানফিল বা যেটা তোমরা ‘ভায়াগ্রা’ হিসেবে জানো গ্রহণ করা শুরু করে সে। এধরনের ওষুধগুলো তার বর্তমান অবস্থার পেছনে কিভাবে ভূমিকা রেখেছে সেটা পরে বলছি। তবে একদিন সে এক কান্ড করে বসে।’

‘যে মেয়েগুলো প্রস্টিটিউট হিসেবে কাজ করে তারা এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যেমন ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল বা বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে সেখানে যায়। মূলত ফাঁদে পড়ায় বাধ্য হয়ে কাজটা করে। আইনি সহায়তার কোনো সুযোগ নেই বিধায় বাধ্য হয়ে কাজটা করতে হয় তাদের। কিন্তু রাসু কোনো এক ভারতীয় মেয়ের ওপর এমন অত্যাচার চালায় যে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে হসপিটালাইজড করা হয়। বেরিয়ে আসে সেই সেক্স কার্টেলের নাম। ফলশ্রুতিতে রাসুর নামও দুবাই পুলিশের কাছে চলে যায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন চ্যানেলে এবং পত্রিকায় নিউজ হয়। রাসুর বাবা-মা বুঝতে পারে তাদের ছেলের মানসিকতা কোথায় চলে গেছে।’

‘দুবাইয়ে কঠোর শাস্তি হতো তার। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার অজুহাতে তার শাস্তি কমিয়ে আনা হয়। শর্ত একটাই: রাসুকে দেশে ফিরে যেতে হবে।’

‘দেশে ফিরে আসলেও তার পরিবার তাকে আর গ্রহণ করেনি। গ্রামেও তাই ঠাঁই হলো না। শহরেও কেউ তাকে চাকরি দিতে চাইলোনা। ব্যাপারটা আস্তে আস্তে ধামাচাপা পড়ে গেলেও সে আর লেবারির দিকে গেলো না। তার চেয়ে নেশা করে রাস্তায় পড়ে থাকাই তার কাছে ভালো মনে হলো।’

‘কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে চাকরি পেলো। লাশকাটা ঘরে!’

‘একদিন নেশায় চুর হয়ে থাকতে থাকতেই তার এক বুড়ো ডোমের সাথে পরিচয় হলো। বন্ধুত্বও হলো। বুড়ো ডোম তাকে সাগরেদ বানানোর প্রস্তাব দিয়ে দিলো। রাসু রাজি হয়ে গেলো।’

‘মর্গে তার কাজের অভাব হতো না। প্রায় প্রতিদিনই লাশ আসতো। নারী-পুরুষ, ছোটো-বড় সব রকমের। কিন্তু তার ভেতরকার যৌন তাড়নাটা এখনো নিভেনি। এবং সেটা পূরণ করতেই এবার সে অন্য আরেক ঘৃণ্য পথে হাঁটা শুরু করলো। মৃতদের সাথে সঙ্গম করা শুরু করলো সে!’

কথাটা শুনতেই রুমের সবার যেন হৃদস্পন্দন থেমে গেলো। ‘নেক্রফিলিয়া!’ শব্দটা তরুণী এক ইন্টার্নের মুখ থেকে বেরিয়ে গেলো। জীবনে কোনো একসময় হয়তো শব্দটা শিখেছিলো সে, কিন্তু এটা সে ভাবেনি যে নিজ চোখে একজন নেক্রফাইলকে দেখতে পাবে।

‘জ্বি,’ প্রফেসর তার ইন্টার্নদের মনের অবস্থা বুঝতে পারছেন। ‘মর্গে আসা লাশগুলোর সাথে সে মাঝরাতে কামসুখে মেতে উঠতো। দুবাই থেকে আসার পর থেকে রাসুর যৌনাঙ্গের পাশে কেমন ঘা হয়ে গিয়েছিলো। এসটিডির লক্ষণ। তাই ব্রথেলগুলোতে কেউ তার সাথে সহবাস করতে ইচ্ছুক ছিলো না। আর মৃতদেহের সাথে সেক্সের ক্ষেত্রে সম্মতিও লাগেনা টাকাও লাগেনা।’

‘এভাবেই ভালোই চলতে লাগলো রাসুর। কিন্তু রাসুর যৌনোদ্দীপক ঔষধপাতি দেখে তার ডোমবন্ধু টের পেয়েছিলো সে কি করছে। সে মানা করতে পারলো না। কিন্তু সাবধান করে দিলো সে বেশিদিন আর এই চাকরিতে নেই, কোনো সমস্যা বাঁধলে রাসুকে বাঁচাতে পারবেনা।’

‘সত্যিই কয়েকদিন পরে তার ডোমবন্ধু চাকরি ছেড়ে দিলো। এতে তার বরং সুবিধাই হলো যেন। তবে বেশিদিন সে সুখ পায়নি। তোমরা প্রায়াপিজম সম্পর্কে জানো?’ প্রফেসর প্রশ্ন ছুঁড়লেন তার শিষ্যদের কাছে।

‘ভায়াগ্রাজাতীয় ওষুধের পাশ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর একটা,’ আরেক আঁতেলের মতো চশমা পড়া ইন্টার্ন জবাব দিলো, ‘যার ফলে লিঙ্গ খুব দীর্ঘ সময় শক্ত হয়ে থাকে। মূলত পেনিসে ব্লাড জমে যাওয়ার কারণে এটি হয়ে থাকে। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিলে এটার ফলাফল হয় ভয়াবহ।’

‘হুম। সারাজীবনের জন্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে। এমনও হতে পারে আর কখনো ইরেকশন হবেনা। ভেরি গুড,’ আঁতেল ইন্টার্নটার উদ্দেশ্যে বললেন প্রফেসর। ‘রাসুর সাথেও তাই হয়েছিলো। একদিন রাতে এই ধরনের কিছু সেবন করেছিলো সে। পরেরদিন সকালেও তার লিঙ্গটা শক্ত হয়ে ছিলো। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে জিনিসটা লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলো। রাসু ভেবেছিলো আপনাআপনি জিনিসটা ঠিক হয়ে যাবে। অবশেষে নিস্তেজ হলো জিনিসটা। কিন্তু সে জানতো না সেটা তার জীবনের শেষ ইরেকশন।’

‘মানে এরপরে আর কোনোদিন দাঁড়ায়নি?’ এক ইন্টার্নের মুখ ফসকে প্রশ্নটা বেরিয়ে গেলে সে লজ্জা পায়। আশেপাশের অনেকে মুখ ফিচকে হেসে ওঠে।

‘নেভার। এটা বেশিদিন চাপা থাকলো না।। রাসুর এই কুকর্ম মর্গের আশেপাশের কোনো এক ওয়ার্ড বয় দেখে ফেলেছিলো হয়তো। টাকার বিনিময়ে ইনফরমেশন এক সাংবাদিকের কাছে বিক্রি করে দেয়। রাসুর জীবনের তৃতীয় কালো অধ্যায় শুরু হয় তখন। হাসপাতালের নাম খারাপ হলো অনেক। তাই স্বাভাবিকভাবে তাকে গণপিটুনি দিয়ে বের করে দেওয়া হলো। বাইরেও শান্তি পেলোনা। মানুষ দেখলেই তাকে মেরে ফেলতে চায় এমন অবস্থা। কিন্তু তার দিকে এগিয়ে যেতো না ভয়ে। নেক্রোফিলিয়া জিনিসটা আমাদের সমাজে একদমই না মেনে নেওয়ার মতো একটি ব্যাপার।’

‘আস্তে আস্তে ঘটনাটা বাতাসের সাথে মিলিয়ে গেলে শহর থেকে দূরে একটি কবরস্থানে তার ঠাঁই হয়। গোরখোদকের কাজ নেয় সেখানে। শরীর ভেঙে পড়ায় রাসুকে দেখে সেই এলাকায় কেউ চিনতে পারলো না। মুখটা সে নিজেই কেটে বিকৃত করে ফেলেছিলো।’

‘লিঙ্গ কাজ না করলেও মস্তিষ্কে যে রাসুর যৌনতা তখনো রয়ে গিয়েছিলো।’

‘আপনি বলতে চাচ্ছেন কবরস্থানে গিয়ে সে আগের কাজটাই করেছে? কিন্তু কিভাবে?’ প্রফেসর কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো। তার আগেই তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নেয় ইন্টার্ন।

‘হুম। যখনই নতুন লাশ আসতো, মহিলা কিংবা পুরুষ রাসু তার কাজ করতো। তবে শরীরের অন্য অঙ্গ দিয়ে। কিন্তু এভাবে হতাশা বাড়তে থাকলো। সে তার অতীতটাকে মিস করছিলো। তাই একদিন এক যুবতীর লাশ এলে সে ঠিক করে রাতে আবার আগের রূপে ফিরে যাবে সে।’

‘সেদিন রাতে শক্ত কাঠির মতো লিঙ্গের সাথে বেঁধে আবার কাজটা করলো সে। কিন্তু সেই সঙ্গমে কোনো তৃপ্তি ছিলোনা। রাসু হার মেনে নিলো। ভেঙে পড়লো সে। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। আরো কঠোর কিছু অপেক্ষা করছিলো তার জন্য।’

‘আগেই বলেছিলাম রাসুর লিঙ্গের পাশে ঘা হয়েছিলো এসটিডির কারণে। সেই ঘা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিলো। কিন্তু সেই যুবতীর শরীরেও গ্যাংগ্রিনের মতো ছিলো যেটার জীবাণু তার ভ্যাজিনাতেও ছিলো। ব্যস, দুয়ে দুয়ে চার মিলে গেলো। ফোরিনিয়ের’স গ্যাংগ্রিন হলো তার লিঙ্গে। এবারও সে কোনো ডাক্তারের কাছে যায়নি। ফলাফল, জিনিসটা পচতে শুরু করে। শেষপর্যন্ত ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি একটাই সমাধান দেন। লিঙ্গ কেটে ফেলতে হবে। রাসুর শরীর দূর্বল হয়ে পড়েছিলো তার জীবনযাপনের কারণে। কোনোভাবেই সে মেনে নিতে পারলো না এটা। ব্রেন স্ট্রোক হলো এরপর। বাকিটা তোমরা দেখতেই পাচ্ছো।’ প্রফেসর বেডের দিকে তাকালে বাকি সবাই প্যাশেন্ট ফোরটি থ্রির দিকে তাকায়। উপরের দিকে তাকিয়ে আছে রাসু। চোখের কোনে পানি জমেছে।

অনেকক্ষণ কেউ কোনো কথা বললো না। ‘ওকে, দ্যাটস অল ফর টুডেজ লেকচার। আপনারা প্রত্যেকে……,’ ইন্টার্নদের পরের টাস্কগুলো বুঝিয়ে দিলেন তিনি। তারপর তারা চলে গেলেও প্রফেসর জ্যাক গিয়ে বসলেন রাসুর পাশে। তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। রাসু যেন হাসার চেষ্টা করলো। কিন্তু মুখের পেশিগুলোও আস্তে আস্তে অবশ হয়ে যাচ্ছে। আর বেশিদিন বাঁচবে না সে। যখন আদো আদো কথা বলতে পারতো তখন প্রফেসরের সাথে তার জীবনের গল্পগুলো বলেছিলো রাসু। প্রতিবার যে ভয়ংকর স্বপ্নটা দেখে সেটাও বলেছিলো। গোরখোদকের কাজ করার আগে আরেক কবরস্থানে ঘটা ঘটনা তার ক্ষয়িষ্ণু মস্তিষ্ক নতুন করে দেখাচ্ছে। । বাকিটা প্রফেসর গবেষণা বা অনুমান করেছে। 

অন্য কেউ হলে রাসুকে গলা টিপেই হয়তো মেরে ফেলতো। কিন্তু প্রফেসরের কাছে সব প্যাশেন্টই আদরের। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে উপযুক্ত সেক্স এডুকেশন, কাউন্সেলিং আর চিকিৎসা পেলে রাসুকে আজ এই দিন দেখতে হতোনা।

একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে মুখ থেকে প্রফেসরের। বেডের পাশে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। ঝকঝকে আকাশে তুলোর মতো মেঘ উড়ছে। কোনো ভাঁটা থেকে কালো ধোঁয়া এসে তুলোগুলোকে ঢেকে দিলো।